ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবার কাঁধে চড়ে রনির অন্তিম যাত্রা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০১:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫ ৩২৯ বার পড়া হয়েছে

রুহুল আমিন রনির জানাজা নামাজ

বাবার কাধেই শেষ যাত্রা হলো প্রয়াত তরুণ, স্বেচ্ছাসেবী সৎ সাহসের স্ফুলিঙ্গ রুহুল আমিন রনির

গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে যাওয়া নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত টিআইবি’র তরুণ ছাত্র সংগঠন ইয়েস গ্রুপের লিডার প্রয়াত রুহুল আমিন ওরফে রনির জানাজ নামাজ শেষে কবরস্থ হওযার পূর্ব মুহূর্তে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখেছেন জানাজায় অংশ নেয়া হাজারো মুসুল্রি। দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রনি মারা যান। এ নিয়ে ওই একই দিনের ঘটনায় চার জনের মধ্যে তিনজন মারা গেলেন। তাদের একমাত্র নারী সঙ্গী সুমি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। মঙ্গলবার বাদ জোহর টেংরি ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে টেংরি গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে রাষ্টবিজ্ঞানে সদ্য গ্র্যাজুয়েট স্বেচ্ছাসেবক তরুণ রুহুল আমিন রনি মধুপুর উপজেলার পৌর এলাকার টেংরি গ্রামের জনৈক সােলায়মানের ছেলে।
তার জানাজা নামাজে মুসুল্লিদের ঢল নেমেছিল। মধুপুর শহীত স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ ও সনাক সদস্য বজলুর রশীদ খানের পরিচালনায় জানাজা নামাজের জমায়েতে সরকারি আনন্দমোহন কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ওই বিভাগের শিক্ষার্থী রনির সহপাঠী শোয়াইব, টিআইবি’র কর্মাকর্তা আতিকুর রহমান, রণির বাবা সোলায়মান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নানা আব্দুর রাজ্জাক জিহাদী স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন। এক ফুপাতো ভাইয়ের ইমামতিতে জানাজা নামাজ শেষে বাবা সোলায়মানের কাধে উঠে প্রয়াত ছেলে রণির নিথর দেহের লাশ। ‘বাবার কাধে সন্তানের লাশ’ নির্মম এ দৃশ্যে সারা মাঠ জুড়ে উপস্থিত হাজারো মানুষকে কাঁদিয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মধুপুর শাখার ইর্ন্টাণ ও ইয়েস গ্রুপের এই তিন সদস্য গোলাবাড়ী হতে প্রতিষ্ঠানের (এসিজি)’র কাজ শেষ করে মধুপুর ফিরছিলেন। টাঙ্গাইল – জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোলাবাড়ী ব্রিজ পার হয়ে কাইতকাই সীমানায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুত গতির ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে মাঝিরা গ্রামের সুইখা জোয়ার্দাররর ছেলর অটো চালক আব্দুল গফুরের মৃত্যু হয় এবং এ সময় অটোরিক্সার যাত্রী ইয়েস গ্রুপের ৩ সদস্য রুহুল আমিন, রহুল আমিন রনি ও সুমি আক্তার গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। চিকিৎসাকালীন মধুপুরের পিরোজপুর এলাকার খালু ( পালিত বাবা) খোরশেদের পালিতপুত্র রুহুল আমিনের মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতেই ঢকায় পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে পরে নেয়া হয় পপুলার হাসপাতালে। সেখানে আইসিইউতে রাখার দুইদিনে উন্নতি না হলে রোববার রাতে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করার পর সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মারা যান রুহুল আমিন রণি। অন্যদিকে কাজের সঙ্গী সুমি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

এদিকে রুহুল আমিন রনিসহ দুর্নীতি বিরোধী দুই তরুণ যোদ্ধার মৃত্যুতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান শোক প্রকাশ করেছেন। তিনিসহ টিআইবি পরিবার এ ঘটনায গভীর শোকাহত। শোক জানানো হয়েছে আনন্দ মোহন কলেজ অধ্যক্ষ ও রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। নিহতের আত্নার শান্তি কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি তারা সমবেদনাা প্রকাশ করেছেন। আহত সুমির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন। শোক জানিয়েছেন মধুপুর সনাকের সভাপতি আব্দুল মালেক, সদস্য ও সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খানসহ সনাক পরিবার, ইয়েস গ্রুপের সদস্যগণ।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

error: Content is protected !!

বাবার কাঁধে চড়ে রনির অন্তিম যাত্রা

আপডেট সময় : ০১:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

বাবার কাধেই শেষ যাত্রা হলো প্রয়াত তরুণ, স্বেচ্ছাসেবী সৎ সাহসের স্ফুলিঙ্গ রুহুল আমিন রনির

গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঘটে যাওয়া নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত টিআইবি’র তরুণ ছাত্র সংগঠন ইয়েস গ্রুপের লিডার প্রয়াত রুহুল আমিন ওরফে রনির জানাজ নামাজ শেষে কবরস্থ হওযার পূর্ব মুহূর্তে এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখেছেন জানাজায় অংশ নেয়া হাজারো মুসুল্রি। দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রনি মারা যান। এ নিয়ে ওই একই দিনের ঘটনায় চার জনের মধ্যে তিনজন মারা গেলেন। তাদের একমাত্র নারী সঙ্গী সুমি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। মঙ্গলবার বাদ জোহর টেংরি ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে টেংরি গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে রাষ্টবিজ্ঞানে সদ্য গ্র্যাজুয়েট স্বেচ্ছাসেবক তরুণ রুহুল আমিন রনি মধুপুর উপজেলার পৌর এলাকার টেংরি গ্রামের জনৈক সােলায়মানের ছেলে।
তার জানাজা নামাজে মুসুল্লিদের ঢল নেমেছিল। মধুপুর শহীত স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ ও সনাক সদস্য বজলুর রশীদ খানের পরিচালনায় জানাজা নামাজের জমায়েতে সরকারি আনন্দমোহন কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ওই বিভাগের শিক্ষার্থী রনির সহপাঠী শোয়াইব, টিআইবি’র কর্মাকর্তা আতিকুর রহমান, রণির বাবা সোলায়মান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নানা আব্দুর রাজ্জাক জিহাদী স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন। এক ফুপাতো ভাইয়ের ইমামতিতে জানাজা নামাজ শেষে বাবা সোলায়মানের কাধে উঠে প্রয়াত ছেলে রণির নিথর দেহের লাশ। ‘বাবার কাধে সন্তানের লাশ’ নির্মম এ দৃশ্যে সারা মাঠ জুড়ে উপস্থিত হাজারো মানুষকে কাঁদিয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মধুপুর শাখার ইর্ন্টাণ ও ইয়েস গ্রুপের এই তিন সদস্য গোলাবাড়ী হতে প্রতিষ্ঠানের (এসিজি)’র কাজ শেষ করে মধুপুর ফিরছিলেন। টাঙ্গাইল – জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোলাবাড়ী ব্রিজ পার হয়ে কাইতকাই সীমানায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুত গতির ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে মাঝিরা গ্রামের সুইখা জোয়ার্দাররর ছেলর অটো চালক আব্দুল গফুরের মৃত্যু হয় এবং এ সময় অটোরিক্সার যাত্রী ইয়েস গ্রুপের ৩ সদস্য রুহুল আমিন, রহুল আমিন রনি ও সুমি আক্তার গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মধুপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। চিকিৎসাকালীন মধুপুরের পিরোজপুর এলাকার খালু ( পালিত বাবা) খোরশেদের পালিতপুত্র রুহুল আমিনের মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতেই ঢকায় পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে পরে নেয়া হয় পপুলার হাসপাতালে। সেখানে আইসিইউতে রাখার দুইদিনে উন্নতি না হলে রোববার রাতে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করার পর সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মারা যান রুহুল আমিন রণি। অন্যদিকে কাজের সঙ্গী সুমি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

এদিকে রুহুল আমিন রনিসহ দুর্নীতি বিরোধী দুই তরুণ যোদ্ধার মৃত্যুতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান শোক প্রকাশ করেছেন। তিনিসহ টিআইবি পরিবার এ ঘটনায গভীর শোকাহত। শোক জানানো হয়েছে আনন্দ মোহন কলেজ অধ্যক্ষ ও রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। নিহতের আত্নার শান্তি কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি তারা সমবেদনাা প্রকাশ করেছেন। আহত সুমির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন। শোক জানিয়েছেন মধুপুর সনাকের সভাপতি আব্দুল মালেক, সদস্য ও সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খানসহ সনাক পরিবার, ইয়েস গ্রুপের সদস্যগণ।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর