ঘুমের সমস্যা থেকে হৃদরোগ
- আপডেট সময় : ১২:২৬:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ৩৭ বার পড়া হয়েছে
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা-সহ নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে ভালো ঘুম না হলে।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে বহু গুনে।
ঘুমিয়ে পড়তে সমস্যা, অল্প বা মধ্য রাতের পরেই ঘুম ভেঙে যাওয়া কিংবা ছয় ঘণ্টার কম ঘুমানো- এগুলোকে ঘুমের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল’য়ের সহকারী অধ্যাপক ও ঘুম-বিশেষজ্ঞা ডা. লরেন্স এপস্টেইন বলেন, “নতুন গবেষণার ফলাফল চিহ্নিত করছে যে, পর্যাপ্ত ঘুম কতটা প্রয়োজন আমাদের।”
হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি ব্যাখ্যা করেন, “কেউ হয়ত পর্যাপ্ত ঘুমের সময় পায় না। কেউ কেউ নিজেই ভালো ঘুমের অভ্যাস নষ্ট করেন। আবার কারও হয়ত শারীরিক সমস্যা রয়েছে যে কারণে ঘুমের মান ভালো হয় না।”
যে কোনো কারণেই হোক, ঘুম ভালো না হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়েই।
গবেষকরা ‘মিডলাইফ ইন দ্য ইউনাইটেড স্টেটস’ সমীক্ষা থেকে ৭ হাজার ৪৮৩ জনের ঘুমের অভ্যাসের সাথে হৃদরোগের সম্পর্ক তথ্য পর্যালোনা করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৬৩ জন ঘুমের রেকর্ড লিপিবদ্ধ করা জন্য হাতে পরার যন্ত্র ব্যবহার করেন। তাদের গড় বয়স ছিল ৫৩ বছর।
গবেষকরা মধ্যবয়সিদের তথ্য পর্যালোচনা করার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। কারণ এই সময়ে জীবনের নানান প্রতিকূলতা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি জীবনের চাপ অনুভব করে কর্মক্ষেত্রে ও পারিবারিক জীবনে।
হৃদসংক্রান্ত সমস্যায় বিবেচনা করার জন্য গবেকরা অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন যে, ‘তারা কি কখনও হৃদসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়েছেন কিনা?’ এবং ‘কখনও কি বুকের আশপাশে আধা ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে ব্যথা অনুভব করেছেন কি-না?’
বাজে ঘুম থেকে হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকি
পাশাপাশি গবেষকরা নিয়ন্ত্রিত নানান তথ্যও পর্যালোচনা করেন। যেমন- হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস, ধূমপান, শারীরিক কর্মকাণ্ড, লিঙ্গ এবং জাতিগত বিষয়।
দেখা গেছে এসব অতিরিক্ত তথ্য যোগ করার পর, যাদের ঘুম নিয়ে সমস্যা নেই তাদের তুলনায় ঘুমে সমস্যায় থাকা ভুক্তভোগীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।
এমনকি যারা হাতে ঘুম পরিমাপের যন্ত্র পরেছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকির পরিমাণ দেখা গেছে অনেক বেশি; প্রায় ১৪১ শতাংশ।
যদিও ঘুমের সমস্যা নিয়ে নারীরা বেশি অভিযোগ করেছেন। তবে পুরুষদের মাঝে হৃদরোগের ভোগার সমস্যা বেশি দেখা গেছে। তবে সার্বিকভাবে ঘুমের সাথে হৃদরোগ হওয়ার বিষয় লিঙ্গগত কোনো প্রভাব নেই।
যা বোঝা গেল
যদি ঘুমিয়ে পড়তে বা ঘুমিয়ে থাকতে সমস্যা হয়- তবে সমাধানের নানান পথ রয়েছে। কিছু অভ্যাস নিজেই রপ্ত করা যায়। আর কিছু সমস্যা নিরসনে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
ডা. এপস্টেইন বলেন, “ঘুমের সমস্যা নিরসনের চিকিৎসা নিলে দিনের বেলায় আরও ভালোমতো সজাগ থাকা যায়; জীবনের মান উন্নত হয়। আর বাজে ঘুম থেকে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে।”