ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব সময় বুক ব্যথা কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ৮২ বার পড়া হয়েছে

অনেকেই বুক ধড়ফড়ের সমস্যায় ভোগেন। কখনো কখনো অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণ এমনটি ঘটে, আবার কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় হঠাৎ করেই এ সমস্যা হচ্ছে। দেখা যায়, সুস্থ শরীরে কাজ করছেন হঠাৎ করেই বুকের বাম পাশে চিনচিনে ব্যথা শুরু হল।

তারপর মনে হচ্ছে, বুক ধড়ফড় করছে। একই সঙ্গে সারা শরীরে অস্বস্তি, বিন্দু বিন্দু ঘাম। এসব লক্ষণ যদি লাগাতার দেখা দিতে থাকে, তাহলে চিন্তার কারণ আছে।

পূর্ণবয়স্ক মানুষের হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার। তবে ব্যক্তিভেদে সামান্য কমবেশি হতে পারে। হার্টের সঙ্কোচন-প্রসারণের সময় ও ছন্দের হেরফের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে তার একটা মাত্রা আছে, সেটা কম-বেশি হলে চিকিৎসার প্রয়োজন।

এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হলো, হৃৎদযন্ত্রের সঙ্কোচন-প্রসারণ যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছাতে পারে না। তখনই সমস্যা দেখা দেয়। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া’।

কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া কী?

অ্যারিদমিয়া হার্টের উপরের প্রকোষ্ঠ অ্যাট্রিয়া বা নীচের প্রকোষ্ঠ ভেনট্রিকলসে দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এ রোগের কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। আবার কারও ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা বা রাতে শুয়ে ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।

অ্যারিদমিয়া সাধারণত দু’রকম হয়- ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া ও ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া। হার্টরেট কমে যাওয়ার ফলে যে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হয়, তা থেকে হার্টে ব্লক হতে পারে, একে বলে ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া। এক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন ৬০ এর নীচে চলে যায়।

প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে প্রায় ৫ জনের হৃদ্যন্ত্রে স্পন্দনের এমন গোলমাল দেখা যায়। বয়স ৬০ বছর পেরোলেই এই সমস্যা বেড়ে যায়। এ ধরনের অ্যারিদমিয়া থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

অন্যদিকে ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া হলো, যেখানে হার্টরেট ১০০ এরও বেশি উপরে চলে যায়। সেক্ষেত্রেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যায়।

কখন সতর্ক হবেন?

সামান্য পরিশ্রমেই অত্যধিক ক্লান্তি, শ্বাস নিতে সমস্যা, শরীর কাঁপা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দুর্বলতার মতো সমস্যাকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে বিপদের ঝুঁকি থাকবে না। ইসিজি, হল্টার মনিটরিং, লুপ রেকর্ডার, ইকোকার্ডিয়োগ্রাফ ও কিছু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।

প্রতিকারের উপায় কী?

 বিশেষজ্ঞদের মতে, আচমকা বুক ধড়ফড় করা শুরু হলে অস্থির না হয়ে বরং শান্ত হয়ে বসুন ও ডিপ ব্রিদিং অনুশীলন করুন। ধীরে ধীরে শ্বাস টেনে আবার ছাড়বেন। এমন করতে থাকলে অনেক আরাম হবে।

বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না, চেষ্টা করুন খোলা জায়গায় হেঁটে আসতে।

এ সময় ভুলেও সিগারেটে টান দেবেন না। সম্ভব হলে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। প্রথমেই পানি মাথায় ঢালবেন না। আগে পা ভেজান, তারপর হাত, গায়ে পানি দিয়ে শেষে মাথা ভেজান।

শরীরে অস্বস্তি শুরু হলে ভারী কাজ করবেন না, সিঁড়িও ভাঙবেন না। চুপ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকুন অথবা এক জায়গায় বসে থাকুন।

শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সব সময় বুক ব্যথা কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

আপডেট সময় : ০৯:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

অনেকেই বুক ধড়ফড়ের সমস্যায় ভোগেন। কখনো কখনো অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণ এমনটি ঘটে, আবার কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় হঠাৎ করেই এ সমস্যা হচ্ছে। দেখা যায়, সুস্থ শরীরে কাজ করছেন হঠাৎ করেই বুকের বাম পাশে চিনচিনে ব্যথা শুরু হল।

তারপর মনে হচ্ছে, বুক ধড়ফড় করছে। একই সঙ্গে সারা শরীরে অস্বস্তি, বিন্দু বিন্দু ঘাম। এসব লক্ষণ যদি লাগাতার দেখা দিতে থাকে, তাহলে চিন্তার কারণ আছে।

পূর্ণবয়স্ক মানুষের হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার। তবে ব্যক্তিভেদে সামান্য কমবেশি হতে পারে। হার্টের সঙ্কোচন-প্রসারণের সময় ও ছন্দের হেরফের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে তার একটা মাত্রা আছে, সেটা কম-বেশি হলে চিকিৎসার প্রয়োজন।

এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হলো, হৃৎদযন্ত্রের সঙ্কোচন-প্রসারণ যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছাতে পারে না। তখনই সমস্যা দেখা দেয়। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া’।

কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া কী?

অ্যারিদমিয়া হার্টের উপরের প্রকোষ্ঠ অ্যাট্রিয়া বা নীচের প্রকোষ্ঠ ভেনট্রিকলসে দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এ রোগের কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। আবার কারও ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা বা রাতে শুয়ে ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।

অ্যারিদমিয়া সাধারণত দু’রকম হয়- ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া ও ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া। হার্টরেট কমে যাওয়ার ফলে যে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হয়, তা থেকে হার্টে ব্লক হতে পারে, একে বলে ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া। এক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন ৬০ এর নীচে চলে যায়।

প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে প্রায় ৫ জনের হৃদ্যন্ত্রে স্পন্দনের এমন গোলমাল দেখা যায়। বয়স ৬০ বছর পেরোলেই এই সমস্যা বেড়ে যায়। এ ধরনের অ্যারিদমিয়া থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

অন্যদিকে ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া হলো, যেখানে হার্টরেট ১০০ এরও বেশি উপরে চলে যায়। সেক্ষেত্রেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যায়।

কখন সতর্ক হবেন?

সামান্য পরিশ্রমেই অত্যধিক ক্লান্তি, শ্বাস নিতে সমস্যা, শরীর কাঁপা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দুর্বলতার মতো সমস্যাকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে বিপদের ঝুঁকি থাকবে না। ইসিজি, হল্টার মনিটরিং, লুপ রেকর্ডার, ইকোকার্ডিয়োগ্রাফ ও কিছু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।

প্রতিকারের উপায় কী?

 বিশেষজ্ঞদের মতে, আচমকা বুক ধড়ফড় করা শুরু হলে অস্থির না হয়ে বরং শান্ত হয়ে বসুন ও ডিপ ব্রিদিং অনুশীলন করুন। ধীরে ধীরে শ্বাস টেনে আবার ছাড়বেন। এমন করতে থাকলে অনেক আরাম হবে।

বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না, চেষ্টা করুন খোলা জায়গায় হেঁটে আসতে।

এ সময় ভুলেও সিগারেটে টান দেবেন না। সম্ভব হলে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। প্রথমেই পানি মাথায় ঢালবেন না। আগে পা ভেজান, তারপর হাত, গায়ে পানি দিয়ে শেষে মাথা ভেজান।

শরীরে অস্বস্তি শুরু হলে ভারী কাজ করবেন না, সিঁড়িও ভাঙবেন না। চুপ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকুন অথবা এক জায়গায় বসে থাকুন।

শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে