অবশেষে  উৎসবমূখর পরিবেশে মধুপুরে লালন স্মরণোৎসব অনুষ্টিত হয়েছে। ২৩  ফেব্রুয়ারি রাতে মধুপুর রাণী ভবানী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসব অনুষ্টিত হয়।

উৎসব উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মধুপুর লালন সংঘের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন তরফদার। মধুপুর লালন সংঘের উপদেষ্টা  সাংবাদিক এস এম শহীদের সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বে  বক্তব্য রাখেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জুবায়ের হোসেন, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরানুল কবির, লালন স্মরণোৎসবের আহবায়ক মো. সবুজ মিয়া, মধুপুর পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোতালেব হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন টাঙ্গাইলের সমন্বয়ক ও জেলা ছাত্র ফেডারেশন এর সভাপতি ফাতেমা রহমান বীথি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের উত্তরীয় দিয়ে বরন করে নেয়া হয় এবং মধুপুর লালন সংঘের উপদেষ্টা প্রয়াত সাংবাদিক এম এ রউফ এর মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

মধুপুর লালন সংঘের উপদেষ্টা অলোক কুমার চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্মরণোৎবে সংগীত পরিবেশন করেন কুষ্টিয়া থেকে আগত লালন শিল্পী শাহাবুল, বাউল রশীদ, গামছা নার্গিস, মুন মোনালিসা, কাজল রেখা এবং মধুপুর লালন সংঘের নিয়মিত শিল্পীবৃন্দ।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি স্থগিত হওয়া মধুপুর লালন স্মরণোৎসব ২৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছিল। কিন্তু অডিটোরিয়ামে সীমিত (ছয়- সাতশো)আসন সংখ্যার কারণে সেখানে উৎসব আয়োজন সম্ভব হয়নি। পরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক টাঙ্গাইল বরাবর বাসস্ট্যান্ডে (স্থগিত হওয়ার আগে নির্ধারিত) অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০ ফেব্রুয়ারি রানী ভবানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উৎসব আয়োজনের পরামর্শ দেন এবং মধুপুর লালন সংঘ থেকে তা গ্রহণ করা হয়। তাই ২৩ ফেব্রুয়ারি মধুপুর লালন সংঘ আয়োজিত লালন স্মরণোৎসব জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের পরিবর্তে মধুপুর রাণী ভবানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, মরমী কবি লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে মধুপুর লালন সংঘ গত ১২ ফেব্রুয়ারি  লালন স্মরণোৎসব ২০২৫’ আয়োজন হয। কিন্তু ইসলামিক কয়েকটি দলের বাধায় অনুষ্ঠান স্থগিত হয়। অনুষ্ঠান স্থগিতের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হলে উপজেলা প্রশাসন এবং মধুপুর বিএডিসি ক্যাম্পের সেনা ক্যাম্প থেকে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। অবশেষে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সমোঝোতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ নির্ধারণ  হয়। এতে মধুপুর হেফাজতে ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেয় অনুষ্ঠান আয়োজনে তারা কোন বাঁধার সৃষ্টি করবে না।